জাতীয় বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপ
জিনাতের পাঞ্চে কুপোকাত আফঈদার বোন আফরা
আজ বৃহস্পতিবার মোহাম্মদ আলী বক্সিং স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত জাতীয় বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে মেয়েদের ৫২ কেজি ওজন শ্রেনীতে তিন রাউন্ডের সবকটিতেই আনসারের আফরাকে হারিয়ে স্বর্ণপদক জিতে নেন প্রথমবার খেলতে আসা নরসিংদী গুডউইল বক্সিং ক্লাবের জিনাত ফেরদৌস।
লড়াইটা যুক্তরাষ্ট্রে প্রশিক্ষণ নেওয়া বক্সার জিনাত ফেরদৌস বনাম বাংলাদেশে প্রশিক্ষণ নেওয়া আফরা খন্দকারের। তবে প্রবাসী বলেই জিনাতের খেলা দেখতে ভীড় ছিল মোহাম্মদ আলী বক্সিং স্টেডিয়ামে। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বক্সার জিনাত ফেরদৌস খুবই অ্যাটাকিং খেলছিলেন। তার প্রত্যেকটি পাঞ্চ আফরা খন্দকারকে আঘাত করছিল। তখন গ্যালারিতে বসা আফরার বোন জাতীয় নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার মুখ ঢাকছিলেন। আবার যখন আফরা জিনাতের মুখে পাঞ্চিং করছিলেন, তখন ‘জোরে মার’ ‘জোরে মারো’ বলে চিৎকার করছিলেন আফঈদা। আজ বৃহস্পতিবার মোহাম্মদ আলী বক্সিং স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত জাতীয় বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে মেয়েদের ৫২ কেজি ওজন শ্রেনীতে তিন রাউন্ডের সবকটিতেই আনসারের আফরাকে হারিয়ে স্বর্ণপদক জিতে নেন প্রথমবার খেলতে আসা নরসিংদী গুডউইল বক্সিং ক্লাবের জিনাত ফেরদৌস।

তখন বেলা ৪টা। লোকে লোকারণ্য বক্সিং স্টেডিয়াম। ঢাকার আফরার খেলা দেখতে হাজির হয়েছিলেন আফঈদা খন্দকার এবং তার বাবা ও মা। মিডিয়ায় হইচই ফেলে দেওয়া এই লড়াই দেখতে এসেছিলেন ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাম্বেসির পাবলিক ডিপ্লোমেসি কাউন্সিলর স্টিফেন আইবেলি। বেলা পৌঁনে পাঁচটায় শুরু হয় জিনাত ও আফরার লড়াই। তিন রাউন্ডের প্রত্যেকটিতেই জিনাতের কাছে মার খেয়েছেন আফরা। সে দিকে তাকিয়ে হতাশ হচ্ছিলেন বোন আফঈদা ও বাবা খন্দকার আরিফ হাসান। বার বার তারা আফরাকে উৎসাহ দিলেও তাতে কোন কাজে আসেনি। শেষ পর্যন্ত হার নিয়েই রিং ছেড়েছেন আফরা। বোনের খেলা দেখে আফঈদার কথা, ‘প্রতিপক্ষ যে (জিনাত) ছিল, সে তো অনেক ভালো বক্সার। ও (আফরা) যে তিন রাউন খেলছে এটাই অনেক।’
খেলা শেষে আফরা খন্দকার বলেন, ‘হেরেছি এতে কোন আক্ষেপ নেই। আমি চেয়েছিলাম যাতে খেলাটি তিন রাউন্ড পর্যন্ত যায়। আলহামদুলিল্লাহ তিন রাউন্ড খেলেই এসেছি।’ আরও বিশেষায়িত অনুশীলনের আর্জি জানিয়ে আফরা বলেন, ‘জিনাত বিদেশে অনুশীলন করে। তার অনুশীলন সুবিধা অনেক ভালো। আমরা যদি ওরকম ভালো সুযোগ-সুবিধা পাই, আমরাও ওদের মতো ভালো করবো।’ নিজের খেলা সম্পর্কে আফরার কথা, ‘জিনাত আক্রমণাত্মক খেলেছে। আমি প্রথম থেকেই রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলেছি। কারণ আমার একটাই লক্ষ্য ছিল, মাচটি তিন রাউন্ড পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া।’ তবে পরেরবার খেলা হলে জিনাতকে হারানোর প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন আফরা।

বাংলাদেশের বক্সারদের আরও টেকনিক রপ্ত করার পরামর্শ দিয়ে জিনাত ফেরদৌস বলেন, ‘আমাদের বাংলাদেশি ছেলে এবং মেয়ে যারা আছে, সত্যিকার অর্থেই ওরা অনেক খেলতে চায়। ওরা রিংয়ে খেলা ছেড়ে দিতে চায় না। আরেকটু টেকনিক যদি রপ্ত করতে পারে, তাহলে অনেক ভালো করবে।’ প্রথমবার জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ খেলতে এসে নিজের অভিজ্ঞতার কথা এভাবেই জানান যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী জিনাত, ‘যেভাবে সবাই আমাদের বক্সিংকে সমর্থন করছে, এটা আমার কাছে অনেক বড় জিনিস। খুব ভালো লাগছে, কত জন আসছে। কত মানুষ সাপোর্ট করছে। আমি এটা প্রথমবার খেললাম, তবে এটাই শেষ নয়।’
ওএফ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: