শর্ত পূরণে ব্যর্থ, বকেয়ার জন্য সাসপেন্ড করা হল চিটাগাং কিংসকে

শর্ত পূরণে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে চিটাগাং কিংস। বকেয়া পাওনা এখনো পরিশোধ করেনি। তাই বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ হয়ে বিপিএলের এই দলটিকে সাসপেন্ড করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

৪৬ কোটি টাকার বেশি দাবি করে দলটিকে গত জুলাই মাসে নোটিশ দিয়েছিল বিসিবি। যদিও দলের কর্ণধার সামির কাদের চৌধুরী বোর্ডের দাবিকে ভিত্তিহীন বলেছেন।

চিটাগাং কিংস কর্তৃপক্ষের বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে বিসিবি। সামির কাদের চৌধুরীর প্রতিষ্ঠান এসকিউ স্পোর্টসের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের হিসাব দেওয়া হয়েছে। বার বার শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় এস কিউ স্পোর্টসকে ভবিষ্যতে কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিসিবি কর্তারা।

চিটাগাং কিংসের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিপিএলের প্রথম দু’বছরের (২০১২ ও ২০১৩) জন্য বিসিবির ১৭ কোটি টাকা পাওনা ছিল। সে জন্য দল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আগেও সাময়িক ভাবে চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। চিটাগাং কিংস কর্তৃপক্ষ টাকা দিতে না পারায় গত বিপিএলের আগে তাঁদের সেই বকেয়ার বেশিটাই মওকুফ করে দেয় বিসিবি। সাড়ে ৩ কোটি টাকা দিতে বলা হয়েছিল তাঁদের। সেই টাকাও সময় মতো দেননি চিটাগাং কিংস কর্তৃপক্ষ। বিসিবির এক কর্তা বলেছেন, ‘‘মাত্র সাড়ে ৩ কোটি টাকাও যে দল দিতে পারে না, তাদের উপর আস্থা রাখা যায় না। তাই আমরা আইনজীবীর সঙ্গে আলোচনা করে নোটিশ পাঠাতে বাধ্য হয়েছি।’’

বিসিবি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ‘চিটাগাং কিংস কর্তৃপক্ষ ধারাবাহিক ভাবে আইনগত এবং আর্থিক দায়বদ্ধতা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। বার বার সতর্ক করা হলেও তাঁরা ফ্যুাঞ্চাইজি ফি, কর, ক্রিকেটার এবং দলের অন্য স্টাফদের বেতন মেটায়নি।’ বলা হয়েছে, সমস্যার সমাধানে গত বছর ২০ সেপ্টেম্বর দল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি চুক্তি হয় বিসিবির। সেই চুক্তি অনুযায়ী তাঁদের সাড়ে ৩ কোটি টাকা দেওয়ার কথা ছিল। সেই টাকাও না দেওয়ায় গত ২২ জুলাই এস কিউ স্পোর্টসের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। তার পরই চিটাগাং কিংসকে বিপিএল থেকে নিলম্বিত করা হয়েছে।

চিটাগাং কিংস কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ নতুন নয়। বার বারই একই ঘটনা ঘটায় পুরো ৪৬ কোটি টাকাই আদায় করতে চাইছেন বিসিবি কর্তারা। আইনি পথেই এ বার সমস্যা মোকাবিলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। গত বিপিএলের সময়ও চিটাগাঁও কিংস কর্তৃপক্ষ ক্রিকেটার-কোচদের বেতন, হোটেল, পরিবহণ-সহ বিভিন্ন খাতে বকেয়া রেখে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। অথচ, বিপিএল থেকে অন্তত ৮০ লাখ টাকা মতো পেয়েছেন তাঁরা।

সামিরের পাল্টা অভিযোগ, বোর্ডের সঙ্গে হওয়া চুক্তিপত্রের কাগজ তাঁকে দেওয়া হয়নি। বিসিবির সাবেক সভাপতি ফারুক আহমেদের সময়ে তিনি চুক্তি পত্রে সই করে দিলেও বোর্ডের তরফ থেকে আর কিছু জানানো হয়নি। বোর্ডের সই করা কোনও কাগজ তাঁকে দেওয়া হয়নি। তাঁর দাবি, বিষয়টি এখন আদালতের বিবেচনাধীন। তাই বিসিবির পাঠানো আইনি নোটিশ বেআইনি।

নতুন করে বিসিবি জানিয়েছে, ফ্র্যাঞ্চাইজিটির কাছে বোর্ডের মূল পাওনা ১৫ লাখ ৫০ হাজার ৬৫ মার্কিন ডলার। আর ২০১২ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত মোট সুদ পাবে ২২ লাখ ৩২ হাজার ৯২ ডলার। সব মিলিয়ে ৩৭ লাখ ৮২ হাজার ১৫৬ ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪৬ কোটি টাকা।